শুক্রবার ভোরে ইসরাইল সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি অনুমোদন করেছে। বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ স্থগিত হবে এবং পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি দেয়া হবে। এর পরেই যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু করলো ইসরাইল।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে কিছু ইসরাইলি সেনা পূর্ব সীমান্তের দিকে এগিয়েছে। নুসেইরাট ক্যাম্প থেকেই কয়েকজন সেনা পূর্বে ইসরাইল সীমান্তের দিকে চলে গিয়েছে। বুকে আশা নিয়ে ছিটমহলের দক্ষিণ অংশ থেকে উত্তরে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো সরতে শুরু করেছে। কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক রব গেইস্ট পিনফোল্ড বলেছেন, শান্তি রক্ষা বাহিনী হিসেবে ইসরাইলে ২০০ সেনা মোতায়েন করার মার্কিন পরিকল্পনা এক্ষেত্রে ‘তদারকির’ ভূমিকা পালন করবে।
পিনফোল্ড যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আল জাজিরাকে বলেছেন, যুদ্ধে তাদের কোনো ভূমিকা থাকবে না। তবে শান্তিরক্ষা বাহিনীর প্রকৃত ভূমিকা কী হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। প্রফেসর বলেন, ‘আমরা জানি না কত সৈন্য সেখানে থাকবে, তারা মার্কিন না আঞ্চলিক তাও স্পষ্ট নয়। তারা কখন প্রবেশ করবে এবং কী ভূমিকা পালন করবে তাও কেউ জানি না। এবং এখানে মূল দিকটি হল যে, আমরা এখনও জানি না হামাস তার যোদ্ধাদের কখন নিরস্ত্র হতে বলবে।’
সেইসঙ্গে পিনফোল্ড যোগ করেছেন, ‘এই পুরো পরিকল্পনাটি আসলে ট্রাম্পের’। ইসরাইলের আর্মি রেডিওর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল গাজার ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের, যারা যুদ্ধের সময় ছিটমহল ছেড়ে চলে গেছে, তাদের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে বাড়ি ফেরার অনুমতি দেবে। ৬০০টি সাহায্যকারী ট্রাক যাতে খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, জ্বালানি এবং রান্নার গ্যাস রয়েছে জাতিসংঘ, স্বীকৃত আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের মাধ্যমে প্রতিদিন গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ বলেছেন, তার সরকার মিশরের সাথে যৌথ প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ব্যবস্থা করতে চায়। এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য গাজার মানুষের জন্য জরুরি প্রয়োজনগুলো যেমন পানি, শক্তি সরবরাহ এবং চিকিত্সা ব্যবস্থা পুনর্নির্মাণ করা। হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ইসরাইলের অনুমোদনের পর জার্মানি গাজার জন্য তাৎক্ষণিক মানবিক সহায়তায় ২৯ মিলিয়ন ইউরো (৩৪ মিলিয়ন ডলার ) প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই আবহে ইন্দোনেশিয়া জাকার্তায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আগে ইসরাইলি জিমন্যাস্টদের ভিসা প্রত্যাখ্যান করেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির একজন ক্রীড়া কর্মকর্তা একথা বলেছেন। ইসরাইলি দলটি ১৯ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়ায় জিমন্যাস্টিকস চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিল, যদিও ইসরাইলের সাথে ইন্দোনেশিয়ার কোনো আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। ইন্দোনেশিয়ান জিমন্যাস্টিক ফেডারেশনের প্রধান ইতা জুলিয়াতি সাংবাদিকদের বলেন, ইসরাইল অংশগ্রহণ করবে না বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।’
সূত্র : আলজাজিরা