বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, বিশেষ আদেশে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায় জামায়াত। আইনের কোনও ব্যত্যয় না থাকলে এ বিষয়ে আমরা সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার আদেশের কথা বলেছি। যার মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়গুলো পাস করিয়ে তার ভিত্তিতে হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি দেখবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তবে আমরা কোনোভাবেই এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির আদেশের পক্ষে নই।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, অনেকে আবার অধ্যাদেশের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। আমরা মনে করি, এটি দুর্বল প্রক্রিয়া। কারণ এর মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে সাংবিধানিক রূপ দেওয়া কঠিন হবে। তাই আদেশের মাধ্যমে হলেই ভালো হয়। সে আদেশের মাধ্যমেই হবে গণভোট।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, বিএনপি প্রথমে গণভোট প্রশ্নে আপত্তি তুললেও পরবর্তী সময়ে রাজি হয়েছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। তবে তারা জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের কথা বলে প্যাঁচ লাগিয়ে দিয়েছে। আমরা মনে করি ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে নভেম্বরে গণভোট হতে পারে। এতে যারা অর্থের অপচয়ের কথা বলছেন, তারা সঠিক বলছেন না। কারণ গণভোটের জন্য কেনা অধিকাংশ সরঞ্জামই জাতীয় নির্বাচনে কাজে লাগতে পারে।
তিনি বলেন, অতীতে জাতীয় নির্বাচনের ১৭ ও ২১ দিন আগেও গণভোটের দৃষ্টান্ত রয়েছে। এটা শুধু হ্যাঁ বা না-এর ব্যাপার। জনগণ হ্যাঁ বললেই জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন হবে।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ৮০টির বেশি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ১৯টিতে আমরা একমত হয়েছি। সেগুলোর ভিত্তিতেই আমরা সই করেছি। নোট অব ডিসেন্ট গণভোটের অংশ হতে পারে না।
জামায়াতের নায়েবে আমির অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন, সচিবালয় ও পুলিশের ৭০-৮০ শতাংশ কর্মকর্তা একটি বিশেষ দলের আনুগত্য করছে। প্রধান উপদেষ্টাকে আমরা বলেছি, নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হলে সুষ্ঠু ভোট হবে না। এ ক্ষেত্রে লটারি পদ্ধতিতে প্রশাসনে রদবদল করতে হবে। এ বিষয়টিও দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
তিনি কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ করেন। তাছাড়াও সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলে তিনি ড. ইউনূসকে জানান। বিশেষ করে নোয়াখালীর কবিরহাটের ঘটনায় নিজেদের উদ্বেগের কথা জানান। তিনি জাতীয় নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম ও রফিকুল ইসলাম খান।