শীর্ষ ৯ জেনারেলকে বরখাস্ত করলো চীন - BNF24 শীর্ষ ৯ জেনারেলকে বরখাস্ত করলো চীন - BNF24
  • শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০৬ অপরাহ্ন

শীর্ষ ৯ জেনারেলকে বরখাস্ত করলো চীন

বিএনএফ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫

চীনের সেনাবাহিনীতে বিরল এক দমন অভিযানে শীর্ষ পর্যায়ের ৯ জেনারেলকে বহিষ্কার করেছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি)। গত কয়েক দশকের মধ্যে এটিই দেশটির সেনাবাহিনীতে সবচেয়ে বড় প্রকাশ্য অভিযান বলে বিবেচিত হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই নয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অর্থনৈতিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের সবাইকে সামরিক বাহিনী থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন চীনের সর্বোচ্চ সামরিক সংস্থা সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন (সিএমসি)-এর উপ-চেয়ারম্যান হে ওয়েইদং, সিএমসির রাজনৈতিক কাজ বিভাগের পরিচালক মিয়াও হুয়া এবং রকেট ফোর্সেসের প্রধান ওয়াং হৌবিনসহ আরও কয়েকজন তিন-তারকা জেনারেল। এদের অনেকেই পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।

অপর কর্মকর্তারা হলেন, হে হংজুন, ওয়াং শিউবিন, লিন শিয়াংইয়াং, চিন শুতং, ইউয়ান হুয়াঝি ও ওয়াং চুননিং।

এর মধ্যে হে ওয়েইদং ছিলেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পর দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা এবং পলিটব্যুরোর সদস্য। মার্চের পর থেকে তাকে প্রকাশ্যে দেখা না যাওয়ায় তিনি তদন্তের মুখে পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। এখন সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হলো।

চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই কর্মকর্তারা পার্টির শৃঙ্খলা গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সামরিক আদালতে বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

বিবৃতিতে একে ‘পার্টি ও সেনাবাহিনীর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে একটি বড় সাফল্য’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধুই দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ নয়, বরং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের অপসারণের একটি শুদ্ধি অভিযানও হতে পারে।

সিএমসি গত জুলাইয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করে সেনাবাহিনীতে ‘বিষাক্ত প্রভাব’ দূর করার আহ্বান জানিয়েছিল এবং কর্মকর্তাদের জন্য ‘কঠোর নিয়ম’ নির্ধারণ করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এই অভিযান পরিচালিত হলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে ছোট পরিসরে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংহে ও লি শ্যাংফুসহ আরও কয়েকজন জেনারেলকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রকেট ফোর্সেসেও একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছিল। বদলি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন ওয়াং হৌবিন। এবার তিনি নিজেও বহিষ্কৃত হয়েছেন।

এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের চীনবিষয়ক গবেষক নিল থমাস বলেন, শি জিনপিংয়ের দৃষ্টিতে দুর্নীতিগ্রস্ত বা অবিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের অপসারণই হলো পার্টির স্ব-সংস্কার, যার মাধ্যমে দলটিকে চিরস্থায়ী শাসনের উপযুক্ত করে তোলা হচ্ছে।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এ ধরনের শুদ্ধি অভিযান প্রশাসনের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে স্তব্ধ করে দেয়। এতে ব্যবস্থা হয়তো আরও স্পষ্ট ও অনুগত হয়। কিন্তু একইসঙ্গে আরও সতর্ক ও ভঙ্গুরও হয়ে পড়ে।

২০ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া পার্টির চতুর্থ প্লেনাম অধিবেশন ঘিরে এখন কৌতূহল তৈরি হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ওই বৈঠকে উপস্থিতির হারই ইঙ্গিত দেবে চীনের সামরিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এই শুদ্ধি অভিযান কত গভীরে পৌঁছেছে।


এ রকম আরো সংবাদ...

Unicode to Bijoy Converter